শেখ মাহতাব হোসেন ডুমুরিয়া খুলনা
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়নের এবার আগাম শাকসবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। এই উপজেলায় এবার কোটি টাকার শীতকালীন সবজি উৎপাদন হয়েছে। সবজি উৎপাদন, বীজ উৎপাদন ও সবজি আবাদে নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে সফলতা পেয়েছেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
ভালো উৎপাদনের পাশাপাশি ডুমুরিয়ায় গড়ে উঠেছে শাকসবজির বাজার। সারা বছরই ডুমুরিয়ায় সবজির আবাদ হয়। তবে সবচেয়ে বেশি সবজির আবাদ হয় শীতকালে। নিরাপদ ও বালাইমুক্ত ডুমুরিয়ার সবজি বিদেশে রপ্তানিও করা হচ্ছে। নিজেদের কষ্টার্জিত সবজি বিদেশে রপ্তানি হওয়ায় মহাখুশি এ অঞ্চলের কৃষক।
ব্যবসায়ী ও কৃষক জানান, ভালো দাম পাওয়ায় প্রতি বছর শাক-সবজির আবাদ বাড়ছে। বিশেষ করে আগাম জাতের শাকসবজি আবাদ করে ভালো লাভ পাওয়া যাচ্ছে।
অনুকূল আবহাওয়ায় সবজির ভালো উৎপাদন ও বাজার দর ভালো পেয়ে লাভবান হয়েছেন চাষিরা। শুধু নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। সবুজে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি লাউ, শিম, করলা,উচ্ছে ,শোশা,মরিচ, লাউশাকসহ হরেক রকমের আগাম সবজি। তাই মাঠে মাঠে এ সব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত কৃষক।
কাক ডাকা ভোরে কোদাল, নিড়ানি, বালতি, স্প্রে মেশিন ইত্যাদি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন কৃষক। সন্ধ্যা অবধি মাঠে থেকে চারার গোড়ায় পানি ঢেলে, গাছের পরিচর্যা করে সবাই বাড়ি ফিরছেন। তাদের কেউ দাঁড়িয়ে কোদাল চালাচ্ছেন। নানা জাতের আগাম সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন স্থানীয় কৃষক।
ডুমুরিয়ার খর্নিয়ার বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকপ্রাপ্ত দেশসেরা সবজি চাষি আবু হানিফ মোড়ল বলেন, আগাম শাকসবজির ফলন ভালো হয়েছে। বিশেষ করে সিম, বেগুন,শোশা,লালশাক। এ বছর দামও ভালো পাচ্ছি।
শোভনার মলমলিয়া গ্রামের কৃষক কামাল বাওয়ালী বলেন, আগাম শাকসবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। সিম, করলা, শোশা ,চাষ করেছিলাম। ৬ বিঘার ঘেরের ভেড়িতে এসব সবজি চাষ করেছিলাম। দাম ভালো পেয়েছি। ডুমুরিয়ার সবজি এখন বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে।
ডুমুরিয়া উপজেলার ৫ নম্বর আটলিয়া ইউনিয়ন বরাতিয়ার কৃষক তাপস বলেন, ডুমুরিয়ার কৃষককে সার, বীজ প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ। এতে ফলন হচ্ছে বাম্পার। এখানের কৃষক সারা দেশে ফসল উৎপাদনের দিক দিয়ে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। এ উপজেলার বিষমুক্ত সবজি এখন বিদেশে যাচ্ছে, যা আমাদের জন্য খুবই খুশির খবর।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, ডুমুরিয়া উপজেলায় আগাম সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। আগাম সবজিতে দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। নানা জাতের আগাম সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন হাজারও কৃষক। ডুমুরিয়ার সবজি স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে সরাসরি ঢাকার কারওয়ান বাজারে যায়। এছাড়া ইতালি, ইংল্যান্ড, কোরিয়ায় এখানকার সবজি রপ্তানি করা হয়। এবার প্রায় কোটি কোটি টাকার আগাম শাকসবজি উৎপাদন করা হয়েছে ডুমুরিয়ায়।