নিজস্ব প্রতিবেদক
খুলনার দৌলতপুরে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে নিজের ছোট মেয়ের নামে মামলা করেছেন এক মা। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরো দু-তিনজনের বিরুদ্ধে নগরীর দৌলতপুর থানায় মামলাটি করা হয়। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রবীর বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ওই মায়ের নাম ফারজানা আফরিন (৪১)। মামলার আসামি বাদীর নিজের ছোট মেয়ে সুমাইয়া বিনতে কবির (১৬)। সুমাইয়া নগরীর দৌলতপুরের দেয়ানা উত্তরপাড়ার এলাকার শেখ হুমায়ুন কবিরের মেয়ে। মামলার এজাহারে বলা হয়, ফারজানা আরফিনের স্বামী শেখ হুমায়ুন কবিরকে ছোট মেয়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেছে। মেয়ে সুমাইয়া এ ঘটনা তাদের কাছে স্বীকার করেছে বলে তিনি দাবি করেছেন।
ফারজানা আরফিন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, গত ৩ জুলাই তিনি ও তার মেজো মেয়ে হুমাইয়া বিনতে কবির বাসার বাইরে ছিলেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা বাসায় ফিরে প্লাস্টিকের জগে রাখা পানি পান করেন। এক পর্যায়ে তারা ঘুমিয়ে পড়েন।অন্যদিকে মসজিদ থেকে মাগরিবের নামাজ পড়ে বাসায় এসে ফ্লোরে রাখা খাবার খেয়ে নিজ কক্ষে হুমায়ুন কবিরও ঘুমিয়ে পড়েন।
গভীর রাতে তার ছোট মেয়ে সুমাইয়া ভয় পেয়ে তার মাকে ডেকে একসঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে। অন্য কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন তার মেজো মেয়ে হুমায়রা। কিন্তু পরদিন সকালে (৪ জুলাই) হুমায়ুন কবিরের সাড়া না পেয়ে ফারজানা তার কাছে গিয়ে স্বামীকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।
তিনি বলেন, বাবা মেয়েকে শাসন করতন। এ জন্য রাগে রাতের খাবার ও পানির সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে সুমাইয়া বাবা হুমায়ুন কবিরকে অজ্ঞাতপরিচয় আরো দু-তিনজন মিলে হত্যা করেছে। তার (স্বামী) বাঁ হাতের বাহুতে দুটি ছিদ্র ও হাতে রক্ত ছিল বলেও তিনি দাবি করেন। তিনি স্বামীর মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য স্বামীর লাশ কবর থেকে উত্তোলন ও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
স্থানীয়রা জানায়, দৌলতপুরের দেয়ানা উত্তরপাড়ার মৃত্যু নিয়ে দু-তিন ধরে নানা আলোচনা চলছিল। রবিবার দুই মেয়েসহ ফারজানা আরফিন থানায় হাজির হন। হত্যায় অভিযুক্ত মেয়ের আচরণ ছিল রহস্যময়। এ কারণে পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে না চাইলেও পরে মামলা নিয়েছে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রবীব বিশ্বাস বলেন, শেখ হুমায়ুন কবিরকে হত্যার অভিযোগে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মেয়ে সুমাইয়া হত্যার ঘটনা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।